
আসন্ন পুরভোটে বেহালায় জোরদার লড়াই দেবে বিজেপি, এমনটাই দাবী করলেন বেহালার বিজেপি নেতা ভাস্কর দাস। বেহালার প্রতিটা ওয়ার্ডেই বিজেপি কর্মীদের উৎসাহ উদ্দীপনা দেখে বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, বিজেপি আর তৃণমূলের মধ্যে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াইয়ের সম্ভাবনা প্রবল। বিজেপি নেতাদের কথায়, তৃণমূলে শোভন গোষঠীদ্বন্দ্বের জেরে তৃনমূল কিছুটা ছন্নছাড়া। পাশাপাশি সিপিএম যেন কিছুটা ক্লান্ত। আর কংগ্রেসের সংগঠন তো বেহালাতে খুবই দূর্বল। এই পরিস্থিতিতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা অবশ্যই তৃনমূল বনাম বিজেপির মধ্যে।
প্রসঙ্গত, তৃণমূলে মূলতঃ শোভন গোষঠীদ্বন্দ্বের জেরে বেহালায় তৃণমূল শিবির এখন দুটি ভাগে বিভক্ত। একটি শোভন গোষ্ঠী অন্যটি রত্না (চ্যাটার্জী) গোষ্ঠী। পাশাপাশি রয়েছে তৃণমূলের বিক্ষুদ্ধ গোষ্ঠী। তাই স্বাভাবিকভাবেই বেহালায় তিনটি ” পথের কাঁটা ” নিয়েই পুরভোটে নামতে চলেছে তৃণমূল।
এলাকার বাসিন্দারা অনেকেই বলছেন, শোভন চ্যাটার্জী তৃণমূলে এলেও বিপদ আবার না এলেও বিপদ। কারন হিসেবে তারা বলছেন, শোভন দলে ফিরলে রত্না (চ্যাটার্জী) গোষ্ঠী বিরোধিতা করতে পারে।
আবার পুরভোটের আগে শোভন তৃণমূলে না এসে বিজেপিতে থেকে গেলে তখন ” শোভন লবির ” সমর্থন তৃণমূল পাবে না। উল্টে তারা বিরোধিতা করতে পারে। এছাড়া ৩ নম্বর বিপদ হলো, তৃণমূলের যেসব নেতারা লক্ষ লক্ষ, কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, গাড়ি, বাড়ি করেছে, অথচ অধিকাংশ কর্মীরা দলের হয়ে দিনের পর দিন কর্মচারীগিরী করে গেছেন, তাদের ভাগ্যে জোটেনি কিছুই। তারা নেতাদের কাছে রয়ে গেছেন উপেক্ষিত। উপরন্তু তাদের আপদে বিপদে খোঁজ নেয় নি দলের কোনও নেতাই। এরাই তৃণমূলের সবচেয়ে বড় বিপদ। এরাই দলে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী বলে পরিচিত।
তৃণমূলের এইসব নানারকম ” নেগেটিভ ” সম্ভাবনাগুলো নিয়েই বিজেপি তুরুপের তাস ফেলতে চলেছে পুরভোটের ময়দানে, এমনটাই বলছেন বেহালার মানুষ।
এই “নেগেটিভ ” দিকটা ধরেই এগোতে চাইছেন বিজেপি নেতারাও। বিগত ২০১০ সালে বেহালার ১২০ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপির ভাস্কর দাস। বিজেপির ওই দুঃসময়’এ দলের ঝান্ডা ধরার এমন কি পোস্টার লাগানোর কর্মী পাওয়া যেতো না। তবুও সেইসময় থেকে ১২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ভাস্কর দাস আত্মপ্রত্যয়ী। দুঃসময় থেকে সুসময় কখনোই থেমে যাননি তিনি। দলীয় যে কোনও কর্মসূচিতে তার অংশগ্রহণ রয়েছে নিয়মিত। তাই এবারও অসন্ন পুর নির্বাচনে ১২০ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির প্রার্থী পদের জন্য আবেদনও করেছেন যথারীতি। তার দাবী, এবার পুরভোটে তৃণমূলকে এক ইঞ্চিও জমি ছারবে না বিজেপি। লড়াই হবে জোরদার।
অন্যদিকে, বিজেপির যেকোনও কর্মসূচিতে উদ্যোগ নেওয়া থেকে শুরু করে, দলের মিটিং মিছিলে নিয়মিত যোগদান করার ক্ষেত্রে ১২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তরুন দাস (রাজু) নজর কেড়েছে দলের নেতাদের। তাই এবার পুরভোটে তিনিও প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন করেছেন। দলীয় সংগঠন করা তরুনবাবু বললেন, “ভোটে এই ওয়ার্ড’এ বিজেপির হয়ে যিনিই প্রার্থী হন না কেন তিনিই জিতবেন।”
স্বাভাবিকভাবেই এলাকায়় ঘরের ছেলে বলে পরিচিত এই দুই নেতার মধ্যে যে কোনও একজন ১২০ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থিপদের প্রধান দাবিদার। এছাড়াও এই ওয়াডের প্রার্থিপদে আবেদন করেছেন আরও ৮/৯ জন বিজেপি কর্মী। এখন দেখার বিষয় কে এই ওয়ার্ড থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পান !