
প্রদীপ কুমার মাইতি
নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ও বিজেপির পাল্টা সভা করল তৃণমূল।পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা-১ ব্লকের শিপুর বাজার এলাকায় ওই সভা হয়েছে।এ দিনের সভা থেকে কার্যত কড়া ভাষায় বিজেপির বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেন দলের ব্লক তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক তথা সাহাড়া অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি প্রভুপদ দাস।
তিনি বলেন, “আমরা শীপুর বাজারে রাতের অন্ধকারে দোকান ভাঙচুর করিনি।আমরা যদি মনে করতাম তাহলে দিনের বেলায় বিজেপির সমস্ত দোকান ভাঙচুর করতাম।এখানে কত বড়ো বাপের ব্যাটা আছে সামনে এসে মোকাবিলা করো।” আমরা তো সন্ত্রাস শুরু করিনি।এবার থেকে আমাদের তা শুরু করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “সাত দিনের মধ্যে বিজেপি যদি মামলা প্রত্যাহার না করে, তাহলে আমরা সরাসরি মোকাবিলা করবো।চারিদিকে আমাদের লোক রয়েছে।কাউকে (বিজেপি) বাড়ি থেকে বেরোতে দেওয়া হবে না।সবাইকে আমরা দেখে নেবো।এই এলাকায় একটাও বিজেপিকে আমরা রাখবো না।”
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এগরা-১ ব্লকের শীপুর বাজার এলাকায় নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে বিজেপির একটি সভা হয়।ওই সভায় নতুন নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন জানিয়ে এলাকার কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ- সহ বিজেপি কর্মী- সমর্থকেরাও যোগ দেন।বিজেপির অভিযোগ, সভায় শীপুর বাজার এলাকার দোকানদারেরা যোগ দেওয়ায় গভীর রাতে তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতীরা বেছে বেছে বিজেপি সমর্থিত ব্যবসায়ীদের দোকান ভাঙচুর চালায়।
এই ঘটনায় এগরা থানায় অভিযোগ দায়ের করে বিজেপি।বিজেপির দাবি, কেউ ধরা না পড়ায় শনিবার সকালে এগরা- শীপুর রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল কয়েকশো দলীয় কর্মী- সমর্থক।তবে অবরোধের খবর পেয়ে এগরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের হঠিয়ে দেয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।যান চলাচল স্বাভাবিকও করে পুলিশ।কিন্তু মঙ্গলবার এগরার শীপুর বাজার সভা করার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্থানীয় দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা দলের ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক প্রভুপদ দাস বলেন, “বিজেপির লোকেরা নিজেরাই তাঁদের দোকান ভাঙচুর করেছে।ঘটনায় আমাদের দলের কেউ যুক্ত নেই।আমাদের দলের আট জন নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করেছে বিজেপি।অবিলম্বে তা প্রত্যাহার না করলে আমরা ছেড়ে কথা বলবো না।” কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব মোর্চার সভাপতি অরুপ দাশ বলেন, “প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের সংবিধান অনুযায়ী সভা করার অনুমতি রয়েছে।আমরা তো সেদিন (শুক্রবার) পুলিশের অনুমতি নিয়ে সভা করেছিলাম।নতুন নাগরিকত্ব আইনের সমর্থনে সভায় হাজির হয়েছিলেন বলে রাতে তৃণমূল পরিকল্পিতভাবে পাঁচটি দোকান ভাঙচুর করে।রাজ্যের সর্বত্র যেখানে বিজেপি সভা করেছে, সেখানেই পাল্টা সভা করছে তৃণমূল।প্রতিহিংসার রাজনীতি আর কতদিন চলবে।পুলিশ- প্রশাসন তো তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে।আগামী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে মানুষ উপযুক্ত জবাব দেবে।”
এ দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম বারিক, এগরা-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি বিজনবিহারী সাউ,সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান শান্তিলতা দাস অধিকারী, উপ-প্রধান মিলন দে, স্থানীয় তৃণমূল নেতা প্রভাত জানা, অঞ্চল যুব তৃণমূল সভাপতি মানস দত্ত, পাঁচরোল অঞ্চল যুব তৃণমূল সভাপতি চন্দন রায়, দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সিদ্ধেশ্বর বেরা, ব্লকের কর্মাধ্যক্ষ আপতার খান ও অভিমন্নু দাস, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শেখ সুমন, এগরা-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি রাজকুমার দুয়ারী, তৃণমূল নেতা শেখ সুরজ আলি, সত্যদুলাল কর ও বাবুল সাহা, ইন্দুভূষণ প্রধান প্রমুখ।
এ দিনের সভায় কয়েকশো তৃণমূল কর্মী- সমর্থকেরা হাজির ছিলেন।